Sitakundu Eco Park



সীতাকুণ্ড ইকো পার্কঃ





আজকে আপনাদের কে বলবো নয়নাভিরাম সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক এর কথা।
এই গরমে যদি একটু স্বস্তি পেতে যান পাশাপাশি প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তবে আমি মনে করি সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক হতে পারে আপনার জন্য অন্যতম জায়গা।এখানে  রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা  বিশাল পার্ক,পাশাপাশি রয়েছে ২টা ঝর্না যার একটার নাম হলো সহস্রধারা ঝর্না যেটা কিনা এই এলাকার মধ্যে যথেষ্ট পরিচিত একটি ঝর্না।



কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গামি যেকোনো বাস এ উঠে সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক এর কথা বললেই একেবারে জায়গা মত নামিয়ে দিবে।রাস্তা থেকে কিছুটা ভিতরে পার্ক টা।গাড়ি থেকে নামলেই আপনি রাস্তার পাশেই সিএনজি দেখতে পাবেন।সিএনজি করে দুই ভাবে ইকো পার্কে যাওয়া যায়।একঃ ইকো পার্ক এর গেইট পর্যন্ত,যার ভাড়া পার পারসন ১০ টাকা করে।
দুইঃ এই ইকো পার্ক এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় সহস্রধারা ঝরনা পর্যন্ত,যার ভাড়া পার সিএনজি ৩০০ টাকা চাইবে।তবে দরদাম করলে ২৭০-২৮০ এর মধ্যে যাওয়া যায়।তবে আমার মতে এখন সিএনজি তে না উঠে আপনারা একটু কষ্ট করে হেঁটেই ইকো পার্ক এর গেইট পর্যন্ত চলে যান।কারন সেটা খুব একটা দূর নয়।পরে ফিরতি পথে ঝর্নার ওখান থেকে সিএনজি উঠতে পারেন এবং সেটাই বেস্ট হবে কারন যাওয়ার সময় হেঁটে গেলে প্রকৃতির সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন পাশাপাশি সবকিছু দেখতেও পারবেন এক্ষেত্রে টাকাটাও সেইভ হলো তাছাড়া তখন এনার্জিও থাকবে।তাইলে আর যাইতে আসতে ৩০০ করে ৬০০ টাকা খরচ করতে হলো না,যাস্ট আসার সময়  ৩০০ টাকা লাগলো। যাই হোক  গেইটে টিকেট কাউন্টার দেখতে পাবেন।টিকেট এর মূল্য পার পারসন ২০ টাকাতবে সাথে বিদেশি থাকলে ৫ ডলার করে।আমাদের সাথে এক চাকমা ফ্রেন্ড ছিল যাকে  অনেকটা বিদেশিদের মতই দেখতে লাগতো..!! কাউন্টারের লোকটা তো আমাদের জিজ্ঞেসই করে ফেললো যে সে বিদেশি কিনা..!!
যাই হোক সেখান থেকে টিকেট কিনে আমরা পার্ক এর ভিতরে প্রবেশ করলাম।

কি কি দেখবেনঃ
শুরুতে একটা চত্বর পরবে।চত্বর টা দেখলেই আপনার মন ভাল হয়ে যাবে কথা দিলাম।একপাশে দেখতে পাবেন  আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর একটি আবক্ষ প্রস্তর  মূর্তি।তার পাশেই আছে একটা শহীদ মিনার। তার পাশে একটা ছোট্ট ব্রিজ এবং ব্রিজ এর পাশেই বাচ্চা দের খেলার জন্য ২\৩ টা রাইড যেমন একটা দোলনা,একটা স্লিপার ইত্যাদি। যদিও সেগুলা বাচ্চাদের দের জন্য বাট লোভ সামলাতে না পেরে আমরাও একটু চরেছিলাম রাইড গুলাতে..!!
রাইড দেখা হলে আবার পিছনের দিকে আসুনগেইট বরাবর এসে এইবার সামনের দিকে চলা শুরু করুন।সবকিছু এই দিকেই।শুরুতে একটা সাইনবোর্ড পাবেন যেখানে পুরা ইকো পার্ক এর কোথায় কি আছে এবং কত কিলোমিটার পর সেগুলাতে পৌঁছাতে পারবেন তা দেয়া আছে।এটা দেখে রাখুন এবং সম্ভব হলে ছবি তুলে রাখুন।এইবার  যাত্রা শুরু করুন।
যাত্রাপথে কিছুক্ষন পরেই পরিশ্রান্ত লাগতে পারে। সেজন্য কিছুক্ষণ পর পর বিশ্রাম নিন।এভাবে আগাতে থাকুন।পথে পথে দেখতে পাবেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য।আমরা ভাগ্যক্রমে অনেক বানর দেখতে পেয়েছিলাম।এছাড়াও ভাগ্য থাকলে আরও  অনেক কিছু দেখতে পাবেন,সেই সাথে ইকো পার্কের সৌন্দর্যমন্ডিত গাছগাছালি তো আছেই এবং জায়জায়গায় বিভিন্ন সাইনবোর্ডে সুন্দর সুন্দর লিখা  দেখতে পাবেন।এভাবে আগাতে থাকলে একে একে শুরুর সাইনবোর্ডে দেখা জায়গা গুলা দেখতে পাবেন যেমন ০.৫ কিলোমিটার গেলে পাবেন গোলাপ চত্বর,১.১ কিমি গেলে পাবেন সুপ্তধারা ঝর্ণা। এটাতে যেতে হলে আপনাকে ১.১ কিমি যাওয়ার পর একপাশের  সিঁড়ি ধরে আবার নিচে নামতে হবে।একেবারে ঘন বর্ষা না হলে এই ঝর্ণা টা তে যাওয়ার দরকার নাই।কারন বছরের বেশির ভাগ সময়ই এটা শুকনা থাকে,সেই জন্যই এর নাম সুপ্তধারা দেয়া হয়েছে।
যদি না গিয়ে থাকেন তবে আরও উপরে উঠতে থাকুন।এভাবে প্রায় ২.৮ কিমি পরে আপনি উঠে যাবেন ১২০০ ফুট উপরে...!! সেখান থেকে আবার সিঁড়ি ধরে নিচে নামতে হবে।এখান পর্যন্ত এসে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিন।কারন সামনে ভালই পরিশ্রম করতে হবে।কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে এবং হালকা পানীয় খেয়ে আবার যাত্রা শুরু করুন।এইবার সিঁড়ি ধরে নিচের দিকে নামতে হবে।নামতে গেলেই বুঝবেন আসার সময় কি পরিমান কষ্ট করতে হবে...!! আমরা সিঁড়ি গুলা গুনেছিলাম।প্রায় ৪৮২ টা সিঁড়ি রয়েছে সেখানে...!!!!




                    সহস্রধারা তে যাওয়ার পথের সিঁড়ি



যাই হোক আসারটা আসার সময় দেখা যাবে এই ভেবে দ্রুত নেমে যান এবং কিছুক্ষন পরেই পেয়ে যাবেন এই পুরা সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় সহস্রধারা ঝর্না..!! এরপর আরকি..? নেমে যান ঝর্নার শীতল পানিতে।তেমন একটা গভীরতা নাই,সুতরাং যারা  সাঁতার জানেন না তারাও মোটামুটি নামতে পারেন।ঘন বর্ষায় গেলে খুবই ভাল হয় কারন তাইলেই ঝর্নার আসল সৌন্দর্য টা দেখতে পারবেন।




                               সহস্রধারা ঝর্না



এরপর ফিরতি পথে কষ্টকর ৪৮২ টা সিঁড়ি পার হতে হবে।সুতরাং সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠেই সিএনজি তে  উঠে পরতে পারেন। ভাড়া ২৭০ থেকে ৩০০ নিবে।সিএনজি আপনাকে একেবারে সীতাকুণ্ড হাইওয়ে তে নামিয়ে দিবে সেখান থেকে আপনি খুব সহজেই বাস ধরে চলে যেতে পারেন আপনার গন্তব্যে।


Comments

Popular posts from this blog

University of Chittagong

Furamon Pahar(ফুরামন পাহাড়)

Bashbaria Sea Beach